স্কিল ডেভেলপমেন্ট কেন গুরুত্বপূর্ণ?
বর্তমান যুগে স্কিল ডেভেলপমেন্ট ছাড়া জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন করা কঠিন। প্রযুক্তি উন্নয়নের সাথে সাথে প্রতিযোগিতাও দিন দিন বাড়ছে। এই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে স্কিল ডেভেলপমেন্ট করা ছাড়া কোন বিকল্প নেই। যে যত বেশি স্কিল ডেভেলপ করবে, কর্মক্ষেত্রে সে তত এগিয়ে থাকবে।
বর্তমান সময়ে উচ্চশিক্ষা অর্জনের পরও বেশিরভাগ মানুষ বেকার। একাডেমিক পড়াশোনার সাথে ভালো কোন স্কিল না থাকায় অনেকে চাকরি পাচ্ছে না, অথবা পেলেও অল্প বেতনে কাজ করছে।
আমরা সবাই ভালো একটি ভবিষ্যৎ চাই। নিজের পছন্দের ক্যারিয়ারে যেতে স্কিল ডেভেলপমেন্ট গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ। বিশেষ করে প্রতিযোগিতার বর্তমান যুগে যোগ্যপ্রার্থী হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা সহজ নয়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা যত বাড়াতে পারবেন, ততই আপনার কাজের পরিধি বাড়ানো সম্ভব হবে।
বিভিন্ন কোম্পানি তাদের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ লোক পাচ্ছে না। আর তাই তারা অন্য দেশের দক্ষ কর্মীদের নিয়োগ করছে। সেই কারণে দেশের অনেক মানুষ বেকার থেকে যাচ্ছে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে, তাছাড়া বেশিদূর যাওয়া সম্ভব হবে না। কারণ,
👉 Chang is not an option, change is mandatory.
ধরুন, আপনি লিখতে ভালোবাসেন, কনটেন্ট লিখেন। কিন্তু অন্য আরেকজন লেখার সাথে সাথে লেখাটি SEO friendly করে লিখতে পারে। এখন জব মার্কেটে উনি আপনার চেয়ে গিয়ে থাকবে শুধু তার একটি স্কিল এর জন্য। কারণ তার লেখা মানুষের কাছে পৌঁছানো সহজ।
আমরা পিছিয়ে আছি কেন?
আমাদের পিছিয়ে থাকার প্রধান কারণ হলো আমরা অন্যের অর্জন দেখে অনুপ্রাণিত হয়, কিন্তু আমরা চিন্তা করে দেখি না তারা কিভাবে সেই সাফল্য অর্জন করেছে। সমালোচনা না করে নিজের স্কিন ডেভেলপ করতে হবে। কারণ কষ্ট করলেই সাফল্য আসবে।
পিছিয়ে থাকার আরেকটি কারণ হলো আমরা নিজেদেরকে অবহেলা করি। যে কোন কিছুর জন্য সময় দিতে হবে। সকল বিষয় নিয়ে প্রচুর ঘাটাঘাটি করতে হবে। এতে করে আপনার আগ্রহ কোন বিষয় নিয়ে সেটি জানতে পারবেন। এরপর সেই বিষয়ে স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য এগিয়ে যেতে হবে।
কি কি স্কিল ডেভেলপ করতে পারেন?
অনেক ধরনের স্কিল রয়েছে আপনি আপনার কাজ বা ইন্টারেস্ট এর উপর নির্ভর করে স্কিল ডেভেলপ করতে পারেন। বর্তমান যুগে শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়াও কিছু টেকনিক্যাল স্কিল জানা থাকলে কর্মক্ষেত্রে অনেক সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়। যে সকল বিষয়ে স্কিল ডেভেলপ করতে পারেন-
ডিজিটাল মার্কেটিং
এসইও
গ্রাফিক্স ডিজাইন
ওয়েব ডিজাইন
ভিডিও এডিটিং
কন্টেন্ট রাইটিং
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
গেম ডেভলপমেন্ট
এইসব স্কিল গুলোর মধ্যে যদি যেকোনো একটি সেক্টর নিয়ে আপনার স্কিল ডেভেলপ করেন, তাহলে কর্ম ক্ষেত্রে অন্যদের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকবেন। এছাড়াও যদি ফ্রিল্যান্সিং করেন তাহলেও অন্যদের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকবেন।
কর্ম ক্ষেত্রে যদি ভালো অবস্থান তৈরি করতে চান, তাহলে আপনার কমিউনিকেশন স্কিল বাড়াতে হবে। আপনি যখন কর্ম ক্ষেত্রে যাবেন, অনেক মানুষের সাথে আপনার কথা বলতে হবে। আপনার দক্ষতার উপর অনেক কিছু নির্ভর করবে। যে প্রধান দুইটি জিনিস লক্ষ্য রাখতে হবে-
Fluent English speaking
Presentation skill,
ধরুন, আপনি একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে ভালো পোস্টে আছেন। সেখানে দেশি-বিদেশে অনেকের সাথে আপনাকে কাজ করতে হবে এবং সবার সাথে যোগাযোগ করতে হবে। একজন বিদেশী এমপ্লয়ীর (Employee) সাথে যখন আপনি কথা বলবেন আপনাকে অবশ্যই ইংরেজিতে কথা বলতে হবে। আপনি যদি ভালো ইংরেজি বলতে পারেন এবং প্রেজেন্টেশন স্কিল ভালো হয় আপনি অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি এগিয়ে থাকবেন। কারণ তখন বাহিরের মানুষের সাথে যোগাযোগের জন্য কোন বাধা থাকবে না।
এছাড়াও বেশ কিছু কর্পোরেট স্কিল ডেভেলপমেন্ট করতে পারেন। যা করলে আপনি জব সেক্টরে অন্যদের চেয়ে একধাপ এগিয়ে থাকবেন। যেমন:-
Microsoft Office
Excel
Accounting related software (QuickBooks, Tally)
বর্তমানে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। তাই এসব যদি আপনি আগে থেকে শিখে রাখেন তাহলে কর্মক্ষেত্রে কাজ করতে অনেক সহজ হয়ে যাবে। এছাড়াও সৃজনশীল দক্ষতা বাড়ানোর জন্য শিখতে পারেন creative skill development. এইসব স্কিল এর মধ্যে রয়েছে-
লিখালিখি
স্কেচ
ফটোগ্রাফি
সিনেমাটোগ্রাফি
ইন্সট্রুমেন্ট
কোনটি আগে শুরু করবেন?
আপনি যখন চাকরির জন্য আবেদন করবেন, তখন অবশ্যই আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী আবেদন করবেন।
আপনি যদি ফ্রেশার হন, তাহলে আপনার জন্য ডাক পাওয়া অনেক কঠিন হয়ে যাবে। কারণ কেউই ফ্রেশার নিয়োগ দিতে চায় না। তবে নিয়োগকারী যদি দেখে যে ফ্রেশার হওয়ার পরও আপনার অনেক টেকনিক্যাল স্কিল রয়েছে, তখন অবশ্যই আপনাকে কল করবে। তাই ফ্রেশারদের জন্য স্কিল ডেভেলপমেন্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
এখন শুরু করার আগে ভাবতে হবে আপনি কোন বিষয়ে দক্ষ। কোন বিষয়ে আপনার আগ্রহ আছে এবং কোন বিষয়ের উপর ক্যারিয়ার গড়তে চান। এর উপর ভিত্তি করে স্কিল ডেভেলপমেন্ট করতে হবে।
যদি আপনার নতুন কিছু করার ইচ্ছা থাকে এবং এই সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়ার ইচ্ছা থাকে তাহলে আপনি #ডিজিটাল_মার্কেটিং, SEO, Graphic Design এই সকল কোর্সগুলো করতে পারেন। চাইলে কোর্স করে ঘরে বসেই ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে ইনকাম করতে পারেন।
আর যদি চাকরির বাজারে এগিয়ে থাকতে চান তাহলে একাউন্টিং রিলেটেড সফটওয়্যার (QuickBooks, Tally), Microsoft Office, Excel শিখতে পারেন।
আর যদি নিজের passion থেকে কিছু করতে চান তাহলে লেখালেখি, স্কেচ, ফটোগ্রাফি, সিনেমাটোগ্রাফি এইসব skill develop করতে পারেন।
যেসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে-
সর্বপ্রথম যে বিষয় মাথায় রাখতে হবে, তা হচ্ছে ধৈর্য ধরতে হবে। শেখার আগ্রহ থাকতে হবে, তা না হলে অনেক সমস্যা ফেইস করতে হবে। এরপর ঠিক করতে হবে আপনি কোন সেক্টরে আগ্রহী। তাছাড়া যতই চেষ্টা করুন না কেন, কোন লাভ হবে না।
শেষ কথা-
সর্বশেষ যে কথা মাথায় রাখতে হবে, তা হল অবশ্যই আপনাকে লক্ষ্য ঠিক করতে হবে। লক্ষ্য ঠিক না করলে সঠিক পথে আগানো যায় না। যাই করুন না কেন সময় নিয়ে করুন। অল্পতে হাল ছেড়ে দেয়া যাবে না। সফলতা সহজে আসে না, এর জন্য চেষ্টা করতে হয়। তবে চেষ্টা করলে সাফল্য অবশ্যই আসবে।
No comments:
Post a Comment